1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

ট্রিপল মার্ডারের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন ঘাতক ইমাম

  • Update Time : রবিবার, ৭ জুন, ২০২০
  • ১৭৯ Time View
পুলিশের হাতে আটক ঘাতক ইমাম

পাবনা সংবাদদাতা: পাবনা শহরের দিলালপুর মহল্লায় স্ত্রী, পালিত কন্যাসহ সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা হত্যা রহস্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত একমাত্র ঘাতক তানভির হোসেন (২৬) গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন।

ঘাতক ইমামকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার এবং লুণ্ঠিত টাকা ও সোনার গহনা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত তিনটি চাকু, ১টি গামছা ও ৪টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

ঘাতক তানভির নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানার হরিপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে। তিনি দিলালপুর মহল্লায় অবস্থিত ফায়ার সার্ভিস মসজিদের ইমাম। তানভির দম্পতি নিঃসন্তান হওয়ায় তারা তানভিরকে ছেলের মত আদর যত্ন করতেন। রোববার দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম) পুলিশ লাইনস অডিটরিয়ামে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাণ্ডের বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করেন।

তিনি জানান, তানভির একাই তিনজনকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও কাঠের বাটাম দিয়ে মাথায় আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। আব্দুর জব্বার দম্পত্তি নিঃসন্তান ছিলেন। সানজিদা জয়া তাদের (১২) তাদের পালিত মেয়ে। সানজিদা শহরের কালেক্টরেট মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

পুলিশ সুপার জানান, পাবনা শহরের দিলালপুরে ব্যাংক কর্মকর্তা (অব.) আব্দুল জব্বারের ভাড়া বাসা। তার বাসার পাশেই ফায়ার সার্ভিস অফিসের মসজিদ অবস্থিত। ওই মসজিদের ইমামতি করা তানভির হোসেনের সাথে দেড় বছর আগে আব্দুল জব্বারের পরিচয় হয়। তার আচার ব্যবহারে সন্তষ্ট হয়ে তাকেও আব্দুল জব্বার দম্পত্তি সন্তানের মতো ভালবাসতেন। সেই সূত্রে ওই বাড়িতে তানভিরের অবাধে যাতায়াত ছিল। এমনকি সন্তানের মতোই ব্যাংক, পোষ্ট অফিসের টাকা তোলাসহ সব বিষয়ে তার সাথে শেয়ার করতেন এই নিঃসন্তান দম্পত্তি। আর এটাই ওই দম্পত্তির কাল হয়ে দাঁড়ায়।

পুলিশ সুপার ঘাতকের বরাত দিয়ে জানান, আব্দুল জব্বার দম্পত্তি তানভিরকে সন্তানের মতো ভালবাসলেও সে মনে মনে তাদের অর্থ সম্পদ, টাকা-পয়সা লুটপাটের পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৫ মে ইমাম তানভির ছুটি নিয়ে নিজের বাড়ি নওগার হরিপুর চলে যান এবং ৩১ মে রাতে পাবনায় ফিরে আসেন।

ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তানভির আব্দুল জব্বারের বাসায় এসে ওঠেন। আ. জব্বার রাতে তানভিরকে তার নিজ বিছানায় ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেন। অর্থ্যাৎ এক রুমে তানভির ও আব্দুল জব্বার এবং অন্য রুমে আব্দুল জব্বারের স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদা ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও তানভির ছিলেন সুযোগের অপেক্ষায়।

ওইদিন ভোর ৪টা ৫ মিনিটের দিকে আব্দুল জব্বার ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যাওয়ার চেষ্টা করলে তানভির পেছন থেকে তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে বিছানার ওপর ফেলে দেয়। পরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর সে অন্য রুমে গিয়ে ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদাকে ঘুমের মধ্যেই কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর তিনি চাবি দিয়ে আলমিরা থেকে নগদ ২ লাখ টাকা, ১ লাখ ভারতীয় মুদ্রাসহ বেশ কিছু সোনার গহনা নিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে নওগাঁয় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।

পুলিশ সুপার জানান, আব্দুল জব্বার দম্পত্তি ও তাদের কন্যার মরদেহ উদ্ধারের পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোর্য়টার) খন্দকার রবিউল আরাফাত লেনিন, সদর থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ, ওসি ডিবি ফরিদ হোসেন এর সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করেন।

ওই টিম প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘাতক তানভিরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার এবং টাকা ও সোনার গহনা উদ্ধার করেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত তিনটি চাকু, ১টি গামছা ও ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রেস ব্রিফিং এর পরই দুপুরে তানভিরকে পাবনার ১ নং আমলি আদালতে ১৬৪ এর জন্য সোপর্দ করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডে কোর্য়াটার) আরাফাত লেনিন বলেন, আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। দুপুর দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তানভিরকে আদালতে সোপর্দের প্রস্ততি চলছিল। এর আগে নিহত আব্দুল জব্বারে ভাই আব্দুল কাদের বাদি হয়ে পাবনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রেস ব্রিফিং এর সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শামিমা আখতার, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোর্য়টার) খন্দকার রবিউল আরাফাত লেনিন, সদর থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ, ওসি ডিবি ফরিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন দুপুরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পাবনা শহরের দক্ষিণ রাঘবপুরের একটি ভাড়া বাসা থেকে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক পাবনা শাখার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার (৬২), তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন (৫৬) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন (১২) এর পঁচা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আব্দুল জব্বারের গ্রামের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর ইউনিয়নের পাইকরহাটি গ্রামে। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। এর আগে জব্বার দম্পতি একটি ছেলেকে দত্তক নিয়ে তাকে লালন পালন করে বিয়ে দেন। এরপর একটি মেয়েকে দত্তক নেন। পাবনা শহরের শালগাড়িয়াতে আব্দুল জব্বারের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। তবে তিনি দিলালপুরে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..